• Human Rights and Peace for Bangladesh (HRPB)
  • Human Rights and Peace for Bangladesh (HRPB)
নিম্ন-মানের ঔষধ উৎপাদনের অভিযোগে ২০টি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

নিম্ন-মানের ঔষধ উৎপাদনের অভিযোগে ২০টি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ও ১৪টি প্রতিষ্ঠানের এন্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট

জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় মানসম্মত ঔষধের নিশ্চয়তা বিধান করে বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ’’হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (HRPB)’’ গত ০৫ই জুন ২০১৬ ইং তরিখে হাইকোর্ট বিভাগে জনস্বার্থে একটি রীট পিটিশন দায়ের করেন।

আজ শুনানীতে বাদী পক্ষের কৌশুলি এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, মানুষ অসুস্থ্য হলে জীবন রক্ষার জন্য এন্টিবায়টিক সহ বিভিন্ন ঔষধ গ্রহন করেন কিন্তু সে ঔষধ যদি সঠিক ও উপযুক্ত মানের না হয় সেক্ষেত্রে রোগীর জীবন বিপন্ন হয় । সরকারের অনুমতি নিয়ে লাইসেন্স গ্রহন করে কারখানা উৎপাদন নীতিমালা ভঙ্গ করে ২০টি ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান যে সকল ঔষধ উৎপাদন করছে সেগুলো মানুষের জীবন হানি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সরকার প্রফেসর আবম ফারুক এর নেতৃত্বে ৫ জন বিশেষজ্ঞ দিয়ে ঔষধ উৎপাদন কারী কোম্পানী সমূহের সক্ষমতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেন এবং তারা ৮৪টি ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ৩ বার করে পরিদর্শন পুর্বক ০১.০২.২০১৬ ইং তারিখে প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত প্রতিবেদন অনুসারে এক্সিম, এভার্ট, বিকল্প, ডলফিন, ড্রাগল্যান্ড, গ্লোব, জালফা, কাফমা, মেডিকো, ন্যাশনাল ড্রাগ, নর্থ বেঙ্গল, রেমো ক্যামিকেল, রীড, স্কাইল্যাব, স্পার্ক, ষ্টার, শুনিপুন, টুডে, ট্রপিকাল এবং ইউনিভার্সাল ফার্মাসিউটিক্যালস এর ঔষধ উৎপাদন মান সম্মত না হওয়ায় তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করেন।

এডভোকেট মনজিল মোরসেদ শুনানীতে আরো বলেন উক্ত প্রতিবেদনে আদ দ্বীন, আলকাদ, বেলসেন, বেঙ্গল ড্রাগ, ব্রিসটল, ক্রিষ্টাল, ইন্দো বাংলা, মিল্লাত, এমএসটি ফার্মা, অরবিট, ফার্মিক, ফোনিক্স, রাশা এবং সেভ ফামাসিউটিক্যালস কর্তৃক উৎপাদিত এন্টিবায়টিক মানসম্মত নয় বিধায় তাদের এন্টিবায়টিক (ননপেনিসিলিন, পেনিসিলিনি ও সেফালোস্পোরিন গ্রুপ) উৎপাদনের অনুমতি বাতিল করার সুপারিশ করেন। তা সত্বেও সরকার জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় রেখে ঐ সকল প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল ও উৎপাদন বন্ধে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। এ ব্যাপারে ১৯শে এপ্রিল ২০১৬ ইং তারিখে মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তিনি আদালতে বলেন সংবিধানের আর্টিকেল ১৮ (১), ২১ এবং ৩২ অনুসারে এ ধরনের ঘটনা মৌলিক অধিকার পরিপন্থি এবং মানুষের জীবন রক্ষার প্রয়োজনে আদালতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

শুনানী শেষে আদালত ’’জীবন রক্ষায় প্রয়োজনীয় ঔষুধ উৎপাদনে ২০টি ঔষধ কোম্পানির নি¤œমানের ঔষধ উৎপাদনের কারণে তাদের লাইসেন্স বাতিলে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বে-আইনী ঘোষনা করা হবে না এবং জীবন রক্ষায় প্রয়োজনীয় মানসম্মত ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাত করতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০টি ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং ১৪টি ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মানসম্মত এন্টিবায়টিক (ননপেনিসিলিন, পেনিসিলিনি ও সেফালোস্পোরিন গ্রুপ) উৎপাদন ও বাজারজাত করতে ব্যর্থ হওয়ায় জনস্বাস্থ্যের প্রতি হুমকির প্রেক্ষিতে উক্ত প্রতিষ্ঠানের এন্টিবায়টিক উৎপাদন ও বাজারজাত করনের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না সে মর্মে ৪ সপ্তাহের রুল

বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন এবং বিচারপতি এ,কে,এম, সাহিদুল হকের আদালতে শুনানি শেষে রুল জারি করে ১ হইতে ৪ নং বিবাদীদেরকে ৭ দিনের মধ্যে উক্ত ১৪টি প্রতিষ্ঠানের এন্টিবায়টিক উৎপাদন বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে সুপ্রীম কোর্ট রেজিষ্ট্রারের মাধ্যমে কম্পøাইন্স রিপোর্ট দাখিলের নিদের্শ দিয়েছেন এবং আদালত পুলিশের আইজিপি এবং র‌্যাব-এর ডিজি কে উক্ত কাজে সর্বাত্মক সহযোগীতার নির্দেশ দিয়েছেন।রেছে হাইকোর্ট ’’

আদালত অপর এক আদেশে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং পরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ঔষুধ প্রশাসনের পরিচালককে ৭ দিনের মধ্যে ২০টি ঔষধ উৎপাদনকারী কোম্পানী কর্তৃক উৎপাদিত জীবন রক্ষাকারী ঔষধ উৎপাদন বন্ধ করা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে কম্পøাইন্স রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন এবং আদালত পুলিশের আইজিপি ও র‌্যাব-এর ডিজি কে উক্ত কাজে সর্বাত্মক সহযোগীতার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

রীট মামলার পিটিশনার হলেন এডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী এবং এডভোকেট একলাস উদ্দিন ভুইয়া। বিবাদীরা হলেন স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং পরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ঔষুধ প্রশাসনের পরিচালক, ঔষধ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক, আইজিপি এবং ডিজি র‌্যাব ।

বাদী পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট মনজিল মোরসেদ। সরকার পক্ষে ছিলেন ডিএজি শশাংক সরকার।

বার্তা প্রেরক

HRPB ডেস্ক