বাড়ী ভাড়া সংক্রান্ত জটিলতা দূরিকরনে ৬ (ছয়) মাসের মধ্য ০৭( সাত) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের নির্দেশ
ভাড়াটিয়াদের বাড়িভাড়া সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি এবং বে- আইনিভাবে ভাড়া বৃদ্ধি, অগ্রিম টাকা গ্রহন এবং যখন তখন বাড়ি ছাড়ার জন্য নির্দেশ সহ বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন আইনের পরিপন্থি বিভিন্ন কার্য্যকলাপ সম্পর্কে পত্র পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে “হিউম্যান রাইটস এন্ড পীস ফর বাংলাদেশ” (ঐজচই) হাইকোর্টে জনস্বাথে একটি রীট পিটিশন দায়ের করলে ১৭.০৫.১০ তারিখ বিচারপতি মোঃ মমতাজ উদ্দিন আহমদ ও বিচারপতি নাইমা হায়দার সমন্বেয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষে রুল নিশী জারি করেন। ০৯.০৫.১৩ তারিখে বিচারপতি মোঃ বজলুর রহমান এবং বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস এর আদালত মামলাটি শুনানী শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন। বেঞ্চ পুনঃ গঠন হলে পরবতীতে রায়ের জন্য মামলাটি কজলিষ্টে আসলেও হরতালের কারনে রায় দেয়া সম্বব হয়নি। গত ২৬.০৫.১৫ তারিখে কজলিষ্টে আবারও মামলাটি রায়ের জন্য আসে। আজ আদালত রায় ঘোষনা করেন এবং রায়ে ৩ টি নির্দেশনা ও পর্যবেক্ষন দিয়ে রুলটি নিষ্পত্তি করেছেন।
১। বাড়ী ভাড়া সংক্রান্ত সমস্যা চিহ্নিত করন, নিয়ন্ত্রন ও প্রতিকারের বিষয়ে সুপারিশ প্রনয়নের জন্য কেবিনেট সেক্রেটারীকে আগামী ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিশন গঠনের নির্দেশ দেন। কমিশনের সদস্য সংখ্যা ০৭ জন হবেন- যেমন- ০১. একজন আইনজ্ঞ, আইন মন্তণালয় কর্তৃক নির্ধারিত ০২. একজন বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ০৩. একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ০৪.গৃহয়ান মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি ০৫. ভোক্তা অধিকার বা অন্যান্ন এনজিও ,যারা বাড়ী ভাড়া সংক্রান্ত কাজ /গবেষনা করেন তাদের একজন প্রতিনিধি ০৬. স্বানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের নিধারিত সিটি কর্পোরেশন থেকে একজন কর্মকর্তা। ০২। কমিশনের রিপোর্ট দেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সরকারের অর্থনৈতিক সক্ষমতা সাপেক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডে আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী ভারা নিয়ন্ত্রক ( রেন্ট কন্ট্রোলার) নিয়োগ প্রধান।
৩। মহানগরী ও বিভিন্ন শহরের ওসিদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, অবৈধ ভাবে কোন ভাড়াটিয়া গ্যাস, বিদ্যুৎ,পানিলাইন বন্ধ করার ঘটনা ঘটলে বা জোর পূর্বক বের করার ঘটনা ঘটলে, কোন পক্ষ অভিযোগ দিলে,ভাড়াটিয়ার সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।
শুনানীতে বাদী পক্ষের কৌশুলি এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন যে, বাড়ী ভাড়া নিয়ন্ত্রন আইনে ভাড়ার রশিদ প্রদান, বাড়ী ছাড়ার জন্য নোটিশ প্রদান, বাড়ী ভাড়া চুক্তি সহ বিভিন্ন বিধান থাকলেও অধিকাংশ বাড়ীওয়ালা আইনের বিধান ভঙ্গ করে ইচ্ছামত ভাড়া বৃদ্ধি, যখন তখন বাড়ী ছাড়ার নোটিশ প্রদান,এমনকি বাড়ী ভাড়ার রশিদ প্রদান করছেন না। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নিধারিত মান সম্পন্ন ভাড়ার তালিকা অনুসারে ভাড়া আদায়ে কোন কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করা যাচ্ছে না। বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রন আইন অনুসারে এর অধীন রুলস প্রণয়নের বিধান থাকলেও আজ পর্যন্ত তা করা হয় নি। ভাড়ার ক্ষেত্রে অনেক বাড়ীর মালিকের বে আইনী কর্মকান্ডের কারনে হাজার হাজার ভাড়াটিয়া অমানবিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ায় জনস্বার্থে রীট মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।এবং যথাযথ ভাবে আইনের ধারাগুলী কার্য্যকরি করার জন্য আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এডভোকেট মনজিল মোরসেদ শুনানীতে বলেন সরকার কর্তৃক কোন ষ্টান্ডার্ড ভাড়া (এলাকাভিত্তিক) নির্ধারন না করায় বাড়ীভাড়া সংক্রান্ত অধিকাংশ বিরোধ সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষেত্রে মধ্যবিত্তদের আয়ের অধিকাংশ আয় বাড়ি ভাড়ার খরচে হয়ে যায়।যার কারনে তার জীবন ধারন কঠিন হয়ে পড়ে এবং বেচে থাকার অধিকার খর্ব হয়। যে কারনে নাগরিকের মৌলিক অধিকার খর্ব হয়। তা ছাড়া বাড়ি ভাড়া ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেনের জন্য নির্দেশ দিলে সরকার শত শত কোটি টাকা রেভিনিউ অর্জন করতে পারবে। তিনি আরও বলেন এলাকা ভিত্তিক রেন্ট কন্ট্রোলার নিয়োগ করার মাধ্যমে বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তি সহজ করা যায়। বাড়ী ভাড়া আইনের ৩(২) ধারায় সরকারকে যে কোন ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রক নিয়োগ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে সুতরাং এলাকাভিত্তিক বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্য থেকে যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রক নিয়োগ করার জন্য তিনি আবেদন জানান।
পিটিশনার হলেন (ঐজচই ) সেক্রেটারী এড: আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী ,এড: রবিউল আলম বুদু,এড: নূরুল ইসলাম বাবুল ও এড: জাফর ইমাম। রীট পিটিশনে বিবাদী করা হয়েছে কেবিনেট সচিব, প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, অর্থ, ভুমি, এলজিাআরডি সচিব, ঘইজ ও হাউজিং এর চেয়ারম্যান।
বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট মনজিল মোরসেদ। সরকার পক্ষে ছিলেন ডি এ জি অমিত তালুকদার ও গৌতম কুমার রায়, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট সুফিয়া আহমেদ।
বার্তা প্রেরক-
এডভোকেট মনজিল মোরসেদ
তাং ০১.০৭.১৫